Header Ads Widget

সাবেক দুই আইজিপি ও এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের রিমান্ড

 বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং কে এম শহীদুল হকের বিরুদ্ধে আদালত রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফিকের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনও আদালত অনুমোদন করেছে।

 বুধবার সকাল সাতটায় পুলিশ তাদেরকে আদালতে হাজির করেছিল। একই সঙ্গে প্রত্যেকের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে রাখার আবেদন করা হয়। সিএমএম আদালতে রিমান্ডের আবেদন শোনার পর সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আট দিনের, শহীদুল হককে সাত দিনের এবং পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফিককে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

 

আব্দুল্লাহ আল মামুনের গ্রেপ্তার রিমান্ডের পেছনের কারণ

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার মোহাম্মদপুরে মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার সকালে তাকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয় এবং ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বিকাল চারটায় মোহাম্মদপুরে আন্দোলনের সময়, রাস্তা পারাপারের চেষ্টা করার সময়, পুলিশের গুলিতে আবু সায়েদ নিহত হন। গুলিটি তার মাথার এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, কোনো উস্কানি ছাড়াই আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করে আবু সায়েদকে হত্যা করেছে।

এই মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান, গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার, এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আরও অনেকে।

পুলিশ জানিয়েছে, তেজগাঁও থেকে রাত সাড়ে ১২টায় আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তার রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সেনা হেফাজতে ছিলেন এবং মামলার কারণে তিনি আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে তাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয় এবং গ্রেপ্তারের পর ডিবি কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেন। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তাকে অবসরে পাঠানো হয়।

শহীদুল হকের রিমান্ডের পেছনের মামলার বিবরণ

ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকাল পাঁচটায় নিউমার্কেটের এক নম্বর গেটের সামনে চলমান আন্দোলনের সময়, শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, এবং গুলি চালানো হয়। এতে অনেকেই আহত হন।

সময়, আসামিদের এলোমেলো গুলিতে আব্দুল ওয়াদুদ মাথার পেছনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে একটায় উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টর থেকে অভিযান চালিয়ে শহীদুল হককে আটক করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সুষ্ঠু তদন্ত ন্যায়বিচারের স্বার্থে তার ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালত সাত দিন মঞ্জুর করেছেন।

শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফির রিমান্ডের পেছনের মামলার বিবরণ

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার পদে থাকাকালীন, ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে বিকেল আড়াইটা থেকে রাত দুইটার মধ্যে, ধানমন্ডি দুই নম্বর রোডের পপুলার আনোয়ারা হাসপাতালের মাঝে বাদীকে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে হাজারীবাগ থানার একটি অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয় বলে বাদী তার দরখাস্তে উল্লেখ করেন।

এই মামলায় পলাতক অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ হোসেন সরদার, এবং ইকরাম আলী মিয়া। এছাড়া আরও কিছু আসামি রয়েছে।

এদিকে, রাতে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলায় সিআইডি অনুসন্ধান শুরুর কথা জানিয়েছিল।

 

Link

Post a Comment

0 Comments